মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে আশ্রয়ণ ২ প্রকল্পের আওতায় নবীনগর উপজেলায় তৃতীয় পর্যায়ে নির্মিত ৬৫ টি গৃহ প্রদানে উপজেলা প্রশাসনের সাংবাদিক সম্মেলন

মলয়া ডেস্ক-

আজ ২৫/০৪/২০২২ রোজ সোমবার নবীনগর উপজেলা মিলনায়তনে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগামীকাল প্রধানমন্ত্রীর উপহার ৬৫ টি গৃহহীন পরিবার কে ঘর প্রদানের বিষয়ে অবগত করতে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।  সাংবাদিক সম্মেলনে প্রেস ব্রিফিং করেন একরামুল ছিদ্দিক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নবীনগর। এসময় উপস্থিত ছিলেন মোশারফ হোসাইন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নবীনগরের বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের সাংবাদিক বৃন্দ। উপজেলা প্রশাসনের লিখিত সাংবাদিক ব্রিফ্রিং এ বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন বিষয় তুলে ধরে বিস্তারিত তুলে ধরা হয় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লালিত স্বপ্ন ছিল বাংলার গরীব দুঃখী  মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার। এ লক্ষ্যে তিনি অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ জীবনধারণের মৌলিক উপকরণের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের বিষয়টি সংবিধানের ১৫ (ক) অনুচ্ছেদে অন্তর্ভুক্ত করেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নোয়াখালী জেলার (বর্তমানে লক্ষ্মীপুর) চরপোড়াগাছা গ্রাম পরিদর্শন করেন এবং গৃহহীন মানুষের গৃহ নির্মাণের নির্দেশ প্রদান করেন। এছাড়া ০৩ জুন ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সমবায় সম্মেলনে তিনি বলেন, "আমার দেশের প্রতি মানুষ খাদ্য পাবে, আশ্রয় পাবে, শিক্ষা পাবে, উন্নত জীবনের অধিকারী হবে- এই হচ্ছে আমার স্বপ্ন। এভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধ বিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন দেশে গৃহহীন মানুষের দুর্দশা লাঘবে তাঁদের গৃহে পুনর্বাসনের মানবিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন এবং  তাঁরই নির্দেশে শুরু হয় গৃহহীন পুনর্বাসন কার্যক্রম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর ১৯৯৭ সালের ২০ মে কক্সবাজার জেলার ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত মানুষের দুর্দশা দেখতে কক্সবাজার পরিদর্শন করেন এবং গৃহহীন মানুষের পুনর্বাসনের নির্দেশ প্রদান করেন। তাঁর নির্দেশনায় শুরু হয় আশ্রয়ণ প্রকল্প। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে লক্ষ্য লক্ষ্য গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিজস্ব তত্ত্বাবধানে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো- ১. ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল, অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন;  ২. প্রশিক্ষণ ও ঋণ প্রদানের মাধ্যমে তাদের জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা এবং ৩. আয়বর্ধক কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র দূরীকরণ। এই প্রকল্পের প্রধান কার্যাবলী হলো- ১. প্রকল্প গ্রামের ভূমি উন্নয়ন; ২. বহুতল ভবন, পাকা, সেমি পাকা ও সিআইটি ব্যারাক নির্মাণ; ৩. ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণ; ৪. পরিবার পুনর্বাসন, তিনমাস ব্যাপী ভিজিএফ প্রদান ও কবুলিয়ত সম্পাদন; ৫. বিদ্যুৎ সংযোগ, সুপেয় পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা, কমিউনিটি সেন্টার, পুকুর খনন/সংস্কার, ঘাটলা, এ্যাপ্রোচ রোড ও অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণ এবং ৬. প্রশিক্ষণ সমবায় সমিতি গঠন ও ঋণ প্রদান কার্যক্রম এবং বৃক্ষরোপণ।

মুজিব শতবর্ষে “বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইদ উপহার হিসেবে আগামী ২৬/০৪/২০২২ খ্রি. তারিখ  গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমগ্র দেশে ৩২৯০৪  টি পরিবারকে জমিসহ গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করার সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন।

সরকারি নির্দেশনামতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন প্রান্তে ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে উক্ত অনুষ্ঠানে সংযুক্ত থেকে এ উপজেলার ৬৫ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের নিকট মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কবুলিয়ত দলিল, জমির খতিয়ান, গৃহ প্রদানের সনদসহ ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হবে। আগামী ২৬/০৪/২০২২ খ্রি. তারিখ সকাল ৯.৩০ টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের নিকট ঘরের চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠান 
অনুষ্ঠিত হবে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলায় মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় “ক” শ্রেণীর ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য ০২ (দুই) শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত প্রদানপূর্বক একক গৃহ নির্মাণের মাধ্যমে পুনর্বাসন সংক্রান্ত তথ্য নিম্নরূপ: 

১. নাটঘর ইউনিয়ন ৮ টি
২. বিটঘর ইউনিয়ন ৩ টি
৩. বীরগাঁও ইউনিয়ন ২ টি
৪. রতনপুর ইউনিয়ন ২ টি
৫. বড়িকান্দি ইউনিয়ন ৫ টি
৬. কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন ২৫ টি
৭. লাউরফতেপুর  ইউনিয়ন ২০ টি।