নবীনগরের সাহেবনগর সংঘর্ষের ভাড়াটিয়া অস্ত্রবাজদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি
- June 7,2020
- 1684 views
স্টাফ রিপোর্টারঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানাধীন শ্যামগ্রাম ইউনিয়নের সাহেবনগর গ্রামে একটি বিলের মাছকে কেন্দ্র করে মাইনউদ্দিনের বাড়ি ও হীরার বাড়ির লোকজনের মধ্যে গত (৩জুন)বুধবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে গুরুতর আহতদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে তাদের মধ্যে একজন হানিফ মিয়ার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়, বর্তমানে তিনি ঐখানে মুমূর্ষু অবস্থায় মৃত্যু সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
গুরুতর আহত ব্যক্তিদের বেশিরভাগই দেশীয় অস্ত্র শস্ত্রে গুরুতর আঘাত ক্ষত বিক্ষত অবস্থায় দেখা গেছে।
এই সম্পর্কে হানিফ মিয়ার স্ত্রী স্বপ্নাহার বলেন,ঝগড়া শুরু হলে আমার স্বামী ঐখানে যাওয়া মাত্র প্রতিপক্ষের লোকজনের সাথে থাকা ভাড়া করা মুখোশ পড়া একজন আমার স্বামীকে বুকে পেটে গুলি করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন,তখন রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে আমাদের লোকজন উদ্ধার করে চিৎকিসার জন্য হাসপাতালে পাঠায় বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিক্যালের আই সিও তে মৃত্যু সাথে পাঞ্জা লড়ছে,আমরা গরীব মানুষ এর সঠিক বিচার চাই সরকার দ্রুত অস্ত্রধারীদের গ্রেফতার করুক বলে কেঁদে ফেলেন।
প্রতিপক্ষের গুলিতে আহত মোঃ পারভেজ বলেন,আমি সকাল ছয়টায় দাঁত ব্রাশ করার জন্য বের হলে প্রতিপক্ষের লোকরা ডাক দিয়া বলে ঐ ওলির পুত পারভেজ কই তাদের কথা শুনে আমি দেখতে আসলে শুক্কু মিয়ার ছেলে খাঁ সাব আমার পায়ে দেশে তৈরি এলজি দিয়ে গুলি করেন, আমার পরনের জিন্সের প্যান্ট ছিঁড়ে গিয়ে আমার পায়ে গুলি লাগে,আমি সরকারের কাছে দাবি করি দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য।
এই ঘটনার আরেক ভুক্তভোগী মোঃ আউয়াল মিয়া বলেন,ঝগড়া শুরু হলে হীরা কাজীর বাড়ির লোকজনের সাথে থাকা ৪ জন মুখোশধারী প্রথমে কয়েকটি ককটেল ফাটিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে এসে আমাদের লোকজনের উপর এলোপাতাড়ি ভাবে গুলি ছুঁড়তে থাকে, তাদের গুলির আঘাতে মাসুম,এনাম,জামাল,হানিফ সহ ২০/২২ আহত হয়। তিনি আরো বলেন, আমরা গোপন সূত্রে জানতে পারি অস্ত্রধারীরা সবাই নদীর ঐ পাড় নরসিংদী জেলার রায়পুর থানার মির্জাচরের লোক তাদের মধ্যে একজনের নাম অলি,আমরা সরকারের কাছে দাবি করি দ্রুত যেন এদের গ্রেফতার করা হয়।
এই ঘটনার গুলির আঘাতে আহত এনাম মিয়ার মা বলেন,বাবা এমন ঝগড়া আমরা আগে দেখি নাই হীরার বাড়ির হেরা কই থাইকা যেন ৪ জন গোন্ডা ভাড়া কইরা আনছে হেরা আইয়া পইলা ককটেল ফুটাইছে পরে বন্দুক দিয়া গুলি শুরু করছে,হেরার গুলি আমার পোলা এনাম মিয়ার শইল্লে লাগছে অহন আমার পোলা হাসপাতালে আছে, আমি সরকারের কাছে দাবি জানায় যারা আমার পোলারে গুল্লি করছে তারারে যেন এরেস্ট করে।
দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালীন সময় ঘরের ভেতর থেকে ভিডিও ধারনকারী গৃহবধূ মিনারা বেগম বলেন,আমি ঘরের জানালা খুলতে গিয়া দেখি হীরার বাড়ির লোকজন বন্দুক দিয়া মাইনউদ্দির বাড়ির লোকজনের উপর এলোপাতাড়ি গুলি করতেছে,ঘটনাটি আমি ভিডিও করতে গেলে মুখোশ পড়া বন্দুকধারী একজনের চোখে পড়লে সে আমার দিকে ছুটে আসে বন্দুক দিয়ে গুলি করার জন্য, আমি তার ভয়ে জানালা লাগিয়ে দিলে সে চলে যায়,পরে থানা পুলিশ আসলে আমি আমার মোবাইলের ভিডিওটি তাদের কাছে হস্তান্তর করি, তিনি আতংকিত কন্ঠে আরো বলেন, বন্দুকধারীরা কেউ আমাদের গ্রামের না সবাই নদীর ঐ পাড় রায়পুরা থানার লোক, গ্রামের ঝগড়ায় যদি বন্দুক দিয়া গুলাগুলি হয় তবে আমরা এই এলাকায় থাকব কি করে সরকার দ্রুত তাদের গ্রেফতার করুক আমরা চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, আসামিরা ঐ দেখেন এখনও নির্ভয়ে এলাকায় ঘুরতেছে আমরাই মাইর খাইলাম আর আমরার লোকই জেলে,আমরা সরকারের কাছে দাবি জানায় অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হোক।
তার কথা শুনার পর হীরার বাড়ির লোকজনের সাথে কথা বলতে চাইলে সেখানে কোন পুরুষের উপস্থিতি টের না পাওয়া যাওয়ায় তাদের পক্ষের একজন মহিলা সৈয়দ আলীর স্ত্রী মমতাজ বলেন,আমাদের পক্ষের কেউ গুলি করেনি তারাই তাদের লোকজনকে গুলি করছে নিজেরা বাঁচতে।
এই সম্পর্কে নবীনগর সার্কেল চৌকস এ এস পি মকবুল হোসন বলেন,এই ঘটনায় অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে, দেশীয় তৈরি এলজির গুলাগুলির বিষয়টি আমি অবগত রয়েছি, আমাদের কয়েকটি টিম মাঠে কাজ করতেছেন, অস্ত্রধারীরা আমাদের জেলার কেউ নয় তারা নরসিংদী জেলার রায়পুর লোক বলে এলাকাবাসী দাবি আমি আমার টিমের সবাইকে নির্দেশ দিয়েছি অস্ত্রধারীরা বাংলাদেশের যেকোনো প্রান্তে থাকোক না কেন ধরে নিয়ে আসার জন্য, আমি আশা করি অচিরেই অপরাধীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হব।