ভৈরবে করোনায় একজনের মৃ’ত্যু: আশেপাশের ১০ বাড়ি লকডাউন

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আব্দুল খালেক (৬০) নামে ইতালিফেরত এক ব্যক্তি মারা গেছেন। রোববার রাতে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় তাকে চিকিৎসা দেয়া দুটি হাসপাতাল ও ওই ব্যক্তির বাড়ির আশপাশের ১০ বাড়িতে জনসাধারনের চলাচল সীমিত করেছে প্রশাসন।

জানা গেছে, আব্দুল খালেকের বাড়ি শহরের জগন্নাথপুর এলাকায়। রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি শ্বাসকষ্ট নিয়ে শহরের আবেদীন হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক তাকে আইসোলেশন সেন্টারে যেতে বলেন। কিন্তু তার স্বজনরা তাকে সেখানে না নিয়ে ‘ডক্টরস চেম্বার’ নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেন। সেখানে রাত ১১টার দিকে তার মৃ’ত্যু হয়। পরে স্বজনরা তাকে বাড়িতে নিয়ে যান।

আব্দুল খালেক (৬০) গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ইতালি থেকে দেশে ফিরেছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ।

উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ জানান, মৃ’ত ওই ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মা’রা গেছেন কি-না সেটা জানতে ঢাকা থেকে আইইডিসিআর’র প্রতিনিধিরা ভৈরবে এসেছেন। তারা নমুনা সংগ্রহের কাজ করছেন।
শরীরে হালকা জ্বর, খুশ খুশ করে কাশছেন—সন্দেহ হতে পারে, করোনা নয় তো? কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই করোনার কারণে সৃষ্ট রোগ কোভিড–১৯–এর প্রকাশ ঘটে জ্বরের মাধ্যমে। এমন অবস্থায় কী করবেন? জ্বর হলেই হাসপাতালে ছুটবেন?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, না, জ্বর হলেই হাসপাতালে ছোটার দরকার নেই। কারণ এই রোগ খুবই সংক্রামক। এতে একজন থেকে অন্যজন, এমনকি হাসপাতালের অন্য রোগীরাও আক্রান্ত হতে পারেন।
তাহলে এমন অবস্থায় করণীয় কী? সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) বলছে, সন্দেহভাজন রোগীকে প্রাথমিকভাবে ঘরেই থাকতে হবে।

এই রোগ নিয়ে এত আতঙ্কের কারণ হচ্ছে এখন পর্যন্ত এর কোনো টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি। চিকিৎসার শরু হয় লক্ষণ দেখে। আইইডিসিআরের তথ্য অনুযায়ী, এই ভাইরাস শরীরে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে ২ থেকে ১৪ দিন সময় লাগে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রথম লক্ষণ হয় জ্বর। এ ছাড়া শুকনো কাশি বা গলাব্যথা হতে পারে।

এ ছাড়া শ্বাসকষ্ট বা নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির অন্য রোগ, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, হৃদ্‌রোগ, কিডনির সমস্যা, ক্যানসার ইত্যাদি থাকলে অরগ্যান ফেইলিওর বা দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হতে পারে।

প্রতিষেধক না থাকায় এর প্রতিরোধে সচেতন হওয়াই এখন পর্যন্ত কার্যকর উপায়। এ জন্য ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে হবে, অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে, ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছেন—এমন ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে, অসুস্থ পশুপাখির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে, মাছ-মাংস ভালোভাবে রান্না করে খেতে হবে। সুত্র – জাগোনিউজ